শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১২:১০ পূর্বাহ্ন
ইন্দুরকানী বার্তা:
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে ছাড়াই উপজেলা যুবলীগের বিশেষ সভার আয়োজন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রিপনের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল শিকদারের সঞ্চলনায় ১৭ জানুয়ারি বেলা এগারোটায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড যুবলীগের বেশ কিছু নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইন্দুরকানীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পিরোজপুর-১আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল ও আ.লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিমের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়। এতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক শাহিন গাজী ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা অবস্থান নেন নৌকার প্রার্থীর পক্ষে। অপরদিকে উপজেলা যুবলীগ কমিটির বাকি অন্যসব নেতাকর্মী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএমএ আউয়ালের পক্ষে। এ নিয়ে যুবলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং শুরু হয়।
এদিকে সাংগঠনিক বিধি না মেনে বিশেষ সভার আয়োজন করে মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করার অভিযোগ এনে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক ইকরামুল সিকদার ও সহ সভাপতি মেহেদি হাসান রিপনের বিরুদ্ধে ১৭ জানুয়ারি ইন্দুরকানী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকা মার্কার প্রার্থী শ ম রেজাউল করিম এর পক্ষে কাজ করায় ঈগল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীরা সভার আয়োজন করে আমাদের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযাগ তুলেছে । আমরা গোপন ভাবে যুবলীগের কোন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডে কমিটি দেয়নি। সভায় আমি ও আমার সাধারন সম্পাদক শাহীন গাজীর নামে মানহানীকর বক্তব্য প্রদান করা হয়। যুবলীগের নামে সভা আহ্বান করা তাদের সাংগঠনিক অধিকার নাই। যা সাংগঠনের গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কাজ। এতে করে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ জন্য আমি উপজেলা যুবলীগের দুই নেতাকে দায়ী করে ইদুরকানী থানায় সাধারণ ডায়রী করেছি।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন গাজী বলেন,দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য যুবলীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি দেয়া হয়। এ কমিটি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত কার্যকর ছিল। তবে এটা কোন সাংগঠনিক কমিটি নয়। কিন্তু যুবলীগের কতিপয় নেতৃবৃন্দ এ বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিয়ে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে বালিপাড়া এবং চন্ডিপুর ইউনিয়নে যুবলীগের কয়েকজন নেতা নতুন কমিটির সাংগঠনিক পদপথবী ব্যবহার করে নির্বাচনের পরে পিরোজপু-১ আসনের নব নির্বাচিত সংসদ সদস্যকে অভিনন্দন জানিয়ে শুভেচ্ছা ব্যানার করেছেন। তবে এ বিষয়টি নজরে আসার পর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি-সম্পাদক তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উক্ত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের যুগ্ন-সম্পাদক ইকরামুল সিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা যুবলীগ কমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দদের না জানিয়ে সভাপতি ও সম্পাদক টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটি দেয়ায় তাদের ছাড়াই আমরা বিশেষ সভার আয়োজন করেছি। উপজেলা যুবলীগের কমিটি থেকে আমরা সভাপতি-সম্পাদকের অব্যাহতি চাই।
এ বিষয়ে সহ-সভাপতি মেহেদি হাসান রিপন বলেন, সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে না জানিয়ে অর্থের বিনিময়ে গোপনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি দেয়ায় আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ সভার আয়াজন করেছি।
ইদুরকানী থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেছেন।